আটপৌঢ়ে গল্প (সম্পুর্ণ গল্প)
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৮:৩৩:১৭ সকাল
১...
বিষন্নতা যদি একটি রোগ হয় তবে সে একজন রোগী।
তবে এর জন্য সে কোনো ডাক্তারের কাছে যায় না।
তবে কি সে একজন ডাক্তার?
নাহ!
তার খালু একজন 'ডাক্তার কদম আলী-ডিগ্রী নাই' টাইপের ডাক্তার। যে কোনো সমস্যায় তিনি নিজে আগ বাড়িয়ে এইটা ওইটা প্রেসক্রাইব করেন। জ্বরে প্যারাসিটামল বা নাপা এক্সট্রা, বমি বন্ধে এবোমিন কিংবা লুজ মোশনে ফ্লাজিল... এসবতো কমন ঔষধ। যে কেউই দিতে পারে। রিটায়ার্ড শুল্ক অফিসের কেরাণী জনাব আব্দুল খালেকের দিন এখন কাটে সবাইকে তার 'অভিজ্ঞতার আলোকে প্রাপ্ত' ডাক্তারি বিদ্যা দিয়ে বিব্রত করার মধ্য দিয়ে।
অভিজ্ঞতার আলোকে প্রাপ্ত কথাটি মনে আসাতে বাবুলের অন্য একটি কথা মনে পড়ে যায়।
'স্বপ্নে পাওয়া মহৌষধ'- এরকম পেপারে অনেক বিজ্ঞাপন সে দেখেছে। তবে ওর বাসার কাছেই যে এমন একজন স্বাপ্নিক-বাবা এসে যাবেন সেটা কখনোই ভাবেনি। তার কাছে গেলে সকল রোগের দ্রুত নিরাময়। আর যেন তেন রোগ নয়। সবই সেই বেশ দামী দামী রোগ। একেবারে জটিল ও পুরাতন আমাশয় থেকে শুরু করে একেবারে ক্যান্সার পর্যন্ত আরোগ্য লাভ করা সম্ভব। বাসার সামনে সেই সকাল থেকেই বিশাল লাইন লেগে যায়। একেবারে মধ্যরাত পর্যন্ত তার বিস্তৃতি। সবাই 'ওনাকে' বাবা ডাকে। তিনি নাকি ছোট খাট অসুখ তার দৃষ্টি দিয়েই সারিয়ে তোলেন। তবে বাবুল একদিন জাষ্ট কৌতুহলের বশবর্তী হয়ে 'বাবা'র সামনে গেলো। সকল আখড়ার মত এর ঘরটাও একই রকম। ভিতরে কয়েকজন মুরীদ নিয়ে বাবা একটা আলীশান সোফায় বসে আছেন। আসলে এরা এদেরকে সাধারণ পাবলিকের সামনে এমন জাঁকজমক পুর্ণভাবে প্রকাশ করে থাকে যে, তার সাথে অন্যদের ভিতরে আপনাতেই একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়। যে জন্য ওদের ভিতরের অন্তঃসারশূন্যতাকে সবাই সহজে অনুভব করতে পারে না।
বাবুল এরকম অনেক ভন্ড বাবা'দেরকে দেখেছে। এদের কয়েক ধরণের টেকনিকের সাথে সে অভ্যস্ত। প্রথমতঃ হয় এরা সিল্কের খুব দামী ও রংচকচকে পোশাক পড়বে, না হয় উর্ধাঙ্গ একেবারে নগ্ন রাখবে। শীতের রাতেও এদের খালি গায়ে বসে থাকতে কোনোরূপ অসুবিধা হয় না। কারণ পেটে আসল জিনিস পড়ে- আর অভ্যাসের একটা প্রভাব তো রয়েছেই।
দ্বিতীয়ত এরা মানুষ বুঝে সবার সাথে এমন এমন কিছু আচমকা টোটকা কথা বার্তা বলে থাকে যে, বিপদ্গ্রস্ত মানুষ সহজেই টাসকি খেয়ে যায়। কারণ যারাই আসে, তারা যে কোনো বিপদে পরিত্রাণের আশায়ই এসে থাকে।
বারান্দায় বসে দূরের ভীড়ের দিকে তাকিয়ে আনমনে এসবই ভাবছিল বাবুল। আরো কতক্ষণ ভাবতো কে জানে। এখন বসে বসে এইসব ভাবতে ওর অনেক ভালো লাগে। কিন্তু মা এসে সব ভন্ডুল করে দিলেন।
: কিরে, এভাবে গ্যাট হয়ে বসে থাকবি?
: তো কি করবো?
: কি করবি মানে? তোর না আজ শফিকের কাছে যাবার কথা... কোথায় যেন কার সাথে দেখা করতে নিয়ে যাবে তোকে...
: তোমাকে অনেকবার বলেছি মা, আর যেখানেই যেতে বল আমাকে শফিক ভাইয়ের কাছে যেতে বলবে না।
: কেন? সে কি করেছে শুনি?
: ও তুমি বুঝবে না...
: আমার বোঝাও লাগবে না। এভাবে বসে বসে আর কতকাল ভাইয়ের কামাই এর অন্ন ধ্বংস করবি? ছেলেটা দিনরাত খেটে খেটে মরছে... আর উনি নবাবের মত ঘরে বসে বসে... এ্যাই, তুই বলতো আমাকে, কি করতে চাস তুই?
: আমি কিছুই করতে চাই না!
: তাতো চাইবিই না। তোর সাথের ছেলেরা সবাই কিছু না কিছু করছে। নাহিদকে সেদিন দেখলাম কি জানি একটা ইন্সিউরেন্সে চাকরি করছে... কিছু না পারিস ওরকম কিছু একটা কর না।
: তোমার প্রতিদিন এই ঘ্যান ঘ্যান আর ভালো লাগে না মা। আমি যদি ইন্সিউরেন্সের দালাল হই, তুমি নিজেই তো একটা পলিসি করবে না... কি করবে?
মা ও ছেলে দীর্ঘক্ষণ চোখে চোখে তাকিয়ে থাকে। শেষে মা-ই চোখ নামিয়ে নেয়। সেই ছেলেবেলায় ছেলেকে ইচ্ছে করে জিতিয়ে দিতে গিয়ে তখনো চোখ নামিয়ে নিতেন।
আর এখন!
এখন ছেলের বড় বেলায় নামিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
ছেলে এখন বড় হয়ে গেছে... ভাবনা চিন্তায়- দেহ মনে... সব দিক দিয়েই। কোনো কথা না বলে রণে ভঙ্গ দিয়ে রান্না ঘরের দিকে চলে যান। দিনের অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে... চকিতে ভাবলেন, জীবনেরও কি?
ভ্রু কুঁচকে বাবুল রাস্তায় নেমে এলো। মেইন গেইট পার হয়ে একবার তিনতলার পশ্চিম পাশের বারান্দার দিকে তাকিয়ে বাবাকে বসা দেখতে পেল। ওকে দেখে শিশুর মত হাসিতে উদ্ভাসিত হলেন। সেই সৌম্য মুর্তিকে দেখে বাবুলের বুকের ভিতরটা কেমন যেন মোচড় দিয়ে উঠল। এই লোকের জন্য ওর কত কিছু করতে ইচ্ছে করে... কিন্তু কিছুই করতে না পারার অক্ষমতা ওকে হিংস্র শ্বাপদের মত ভিতরে ভিতরে একটা জানোয়ারে পরিণত করতে চায়। তবে ঐ যে... বারান্দায় বসা ওর জনকের শান্ত-সৌম্য মুর্তিটা ওকে একেবারে ঠান্ডা করে দেয়। মাথা নীচু করে গলির মোড়টার দিকে আগাতে থাকে... যেখানে ওর মতো এরকম ভিতরে জানোয়ার কিন্তু বাইরে নির্জীব মানুষ- সেরকম ক'জন বন্ধু রয়েছে। অলস আড্ডায় সময়ের কাটা নিজেদের আয়ত্তে রয়েছে মনে করে আত্মতৃপ্তিতে মগ্ন! দূর থেকে বাবুলকে দেখে দু'একজন হাত উঠিয়ে আনন্দ প্রকাশ করল। ব্যস! ঐটুকুই। এরপরে আবার চায়ের দোকানটাকে পুরুষালী হাসিতে মাতিয়ে রাখল। ঠোঁটের কোণে অকারণেই হাসির একটা রেখা ফুটে উঠল বাবুলের।
প্রতিদিনই বন্ধুদের কাছে আসতেই এরকম হয়। কিন্তু নিজেকে তো আর আয়নায় দেখা যায় না!
তাই হাসিটা আর ওর নজরে পড়ে না। তবে এখানে এলেই মনের ভিতরেও কেন জানি অদ্ভুদ এক আনন্দ জাগে... কি এক অজানা শিহরণে বুকটা ধুকপুক করে... গলার কাছে কি যেন একটা দলা হয়ে জমে যেতে চায়। ইচ্ছেকৃত গলা খাকারি দিতে হয়... বারবার...
হামিদের চায়ের দোকানের বিপরীতেই ব্রাকের শাখা অফিস।
বারবার সেখানেই মন এবং চোখ-দুটোই চলে যায়।
মুখে বসন্তের দাগওয়ালা সেই মেয়েটি যে এখানেই চাকরি করে। তাইতো বাবুলের এখান থেকে নড়তেই ইচ্ছে করে না। বন্ধুরাও সেটা জানে। এজন্য নখরামি করে মটর বাইকে করে ওকে নিয়ে ঘুরতে যেতে চায়। তবে সেও এমন ভাব দেখায় যে ' কে থাকতে চায় এখানে?'... বন্ধুরাও চোখ মটকে হাসে... মনের শুদ্ধতা ঝরে পড়া হাসিতে ওদের সাথে বাবুলও যোগ দেয়। তবে সে বুঝতে পারে না যে, ব্রাকের মাঠকর্মী সেই মুখে বসন্তের দাগওয়ালা কণা নামের মেয়েটির জন্যই ওর মনের ভিতরের জেগে উঠা আনন্দ ও শিহরণ! যা প্রতিটি মুহুর্তেই ওর সঙ্গী হয়... অবচেতন মনে ওর আনন্দ-মধুর জীবনকে একটা নির্দিষ্ট গতিতে সচল রাখতে সাহায্য করে।
জীবনটা তো আর সব দিন একই ভাবে যায় না... যাবে ও না।
২...
প্রতিদিন একই রুটীন।
কনার কাছে জীবনটা অসহ্য ঠেকছে। সেই কাকডাকা ভোরে উঠে কল চেপে পানি তোলা। প্রাতঃক্রিয়া সেরে নাস্তা তৈরী করা। মোটে চারটা চুলা। সেখানে ১০ রুমের মানুষ রান্না করে। চুলার দখল পেতে এজন্য এতো ভোরে উঠতে হয়। ছোট দুই রুমের বাসায় ওরা পাঁচজন মানুষ গাদাগাদি করে থাকে। এক রুম বাবা মা’র জন্য... বাকীটাতে বড় বোন ও তার ছোট দুই মেয়ে এবং সে নিজে। পশুর মত বসবাস এবং বেঁচে থাকাটা এজন্যই অসহ্য লাগে ইদানিং। স্যাতস্যাতে পরিবেশে ছারপোকার বসতি গড়ে উঠেছে। লম্বা ‘এল’ শেপের ভাড়া বাসাটার এক অংশ গার্মেন্টসে চাকুরিজীবিদের কাছে ভাড়া দেয়া হয়েছে। এই রুমগুলো ব্যাচেলরদের জন্য। সেগুলো এক রুমের... বাহিরে টয়লেট ও গোসলখানা। তবে দুই রুমের কথিত ‘ফ্ল্যাট’ এর ভিতরেই ‘এটাচড বাথরুম-টয়লেট। এরকম ‘ফ্ল্যাট’ রয়েছে ৪টি। আর বাকী ৬টি ব্যাচেলরদের জন্য। সেখানে এক এক রুমে চারজনের বেশী করে থাকছে। গিদার মুন্সীর এরকম আরো দু’টো বাড়ি রয়েছে।
একই প্যাটার্ণের।
এভাবে বানালেই নাকি ভাড়া বেশী উঠে। আর সবচেয়ে বড় কথা হল বাসা কখনো খালি থাকে না। গিদার নামের মতোই তার আচরণ ও চলাফেরা। এজন্যই তাকে মানুষ এই নামেই ডাকে। আসল নাম শমসের আলী। তবে ডাকতে ডাকতে এখন ‘গিদার মুন্সী’ই হয়ে গেছে। মুন্সী ওদের কোনো পারিবারিক উপাধি নয় কিংবা সে যে খুব পরহেজগার তাও নয়। মাথায় সবসময় একটা টুপি থাকেই। এজন্য মুন্সী উপাধি। আর নোংরা থাকার কারণে ‘গিদার’ নামকরণ। ওনার নামের মতোই কনাদের ভাড়া বাসাটার পরিবেশ ও নোংরা। মেইন রাস্তা থেকে অনেকটা নীচুতে হওয়াতে কিছুটা যায়গা সারা বছরই প্যাকে ভর্তি থাকে। আর অধিবাসিদের পালিত হাঁস-মুরগীর মলে পুতি-দুর্গন্ধময় এলাকাটা।
ব্যাংকের জানালা দিয়ে মোড়ের চা এর দোকানের দিকে তাকিয়ে আনমনে এসব ভাবছিল কনা। সেখানে কয়েকজন যুবক আড্ডা দিচ্ছিল। ওদের সবাইকে না চিনলেও একজনকে বেশ ভালোভাবেই চিনে সে। বছরখানিক হল ওকে দূর থেকে দেখে শুধু। বাসা থেকে অফিসে যাওয়া-আসার পথে ওর পিছু নিলেও আজ পর্যন্ত কখনো খারাপ-ভালো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে পুরুষ মানুষের চোখের দৃষ্টি কনা ভালোই চিনে... বোঝে। বাবুল নামের ছেলেটির দৃষ্টিতে ওর প্রতি সীমাহীন ভালোবাসা সে দেখতে পেলেও সে নিজে থেকে কিছু বলে না... সাড়া দেয় না। ছেলেটি একবার বেনামে একটি চিঠি দিয়েছিল। সেটা আজও সে সযত্নে রেখে দিয়েছে। তবে আজকাল কেউ কাউকে চিঠি দেয় না। এজন্য বেশ অবাক হয়েছিল। এখন তো ফেসবুকে রোমান্স চলে... না হলে মোবাইলে ঘন্টার পর ঘন্টা অলস প্রেমালাপ। এদিক দিয়ে বাবুল অনেক ব্যাকডেটেড।
এই নিয়ে আজ দু’বার বাবুলের সাথে চোখাচুখি হয়ে গেলো।
এভাবেই কাটছে সময়।
একজন নীরব প্রেমিকের এই উৎকন্ঠাটুকু কেন জানি আজকাল কনার অসহ্যকর জীবনের ক্ষণগুলোতে একটু হলেও আনন্দ দিয়ে যায়। তবে মেয়ে বলে সে উপযাজক হয়ে তো আর বলতে পারে না যে ‘ তোমায় ভালোবাসি’।
এছাড়াও ওর আরো সমস্যা রয়ে গেছে। বাসায় অসুস্থ মা... ডিভোর্সী বোন... অক্ষম বাবা। এতোগুলো মানুষের জন্য খাবারের জোগাড় করতে হয় ওকে। বড় বোন অবশ্য বাসায় বসে কিছু সেলাইয়ের কাজ করে। আশেপাশের মহিলারা অর্ডার দেয়। যা আয় হয় তাতে করে জীবনকে বাঁচিয়ে রাখার সংগ্রামে সেও কিছুটা অবদান রাখে। তবে সেটা একেবারে অকিঞ্চিত।
এই অবস্থায় কীভাবে কনা কাউকে বলে, ‘চলো, ঘর বাঁধি!’
আর যাকে বলবে সেও তো কিছুই করে না।
শুধু ভালোবাসা দিয়ে তো আর জীবন চলে না...
আর কনা চলে গেলে বাবা মা- বোন আর তার দুটি বাচ্চাকে কে দেখবে?
সাইড ব্যাগটি কাঁধে নিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে বের হয়। ফিল্ডে যেতে হবে। এটাই তো ওর কাজ। দোকানের সামনে আসতেই উচ্ছল ছেলেগুলো কেন জানি এক মুহুর্ত থেমে যায়। কনার কাছে মনে হল চারিদিকে সব মুহুর্তের জন্য থমকে গেল। সময়ও যেন স্থির... বাবুলের বন্ধুদের চোখে ভাষা খেলা করে... সবাই বাবুলের দিকে তাকিয়ে থাকে। আর যাকে নিয়ে তাদের এই খেলা, সে যেন পাথরের ভাস্কর্য! মাথা নিচু করে নিজের পায়ের নখের দিকে তাকিয়ে আছে।
স্লো মোশন ছবির মতো কনা বাবুলকে পাশ কাটিয়ে যায়।
তবুও একজন প্রেমিক কেন জানি তার ভালোলাগার মানুষটির দিকে তাকাতে পারে না। কত কথা জমা রয়েছে তার বুকে! দিনে দিনে এই না বলা কথাগুলো ওকে আরো ম্রিয়মান করে তোলে।
কনার খুব খারাপ লাগে।
সে আরো দু’কদম গিয়ে দাঁড়িয়ে যায়।
এবারে পিছনে ফিরে হেঁটে আসে।
বাবুলের সামনে এসে বলে, ‘এই যে শুনুন।‘
তবুও যুবকটি মাথা নিচু করে থাকে। ওর বন্ধুরা ওকে হাত দিয়ে ধাক্কা দিতেই সে মাথা উপরে তোলে।
এবং আশ্চর্য হয়ে ওর স্বপ্নের মানবীকে ওর সামনে দাঁড়ানো দেখতে পায়!
একটা আদিগন্ত ভালোবাসা বাবুলের চোখ হয়ে কনার চোখের ভিতর দিয়ে ওদের দুজনের হৃদয়কে স্পর্শ করে... সে উঠে দাঁড়ায়। বলে,
: ‘আমাকে বলছেন?’
: হ্যা... আমার সাথে একটু হাঁটবেন? – কথাগুলো বলতে কনার খুব যেন কষ্ট হচ্ছিল। তবে ওর ভিতরে কি যেন একটা বাড়াবাড়ি রকমের অজানা ব্যাথা ওকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছিল। তাই একটা ঘোরের ভিতর থেকে সে বলে যাচ্ছে।
ওর সামনের বিমুঢ় যুবকটিকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সে পা বাড়ায়। কি এক অমোঘ আকর্ষণে যুবকটিও ওর পিছনে হাঁটতে থাকে।
চায়ের দোকানে বসা যুবকটির বন্ধুরা হা করে এই অদ্ভুদ দৃশ্যটি দেখে। কিছুদূর গিয়ে যুবক ও যুবতি পাশাপাশি হয়ে যায়। যেন ওরা কতদিনের চেনা!
একসময় সবার চোখের সামনে দিয়ে গলির মোড় ঘুরে ওরা অদৃশ্য হয়ে যায়।
এভাবেই একটা সম্পর্ক তৈরী হয় বাবুল ও কনার ভিতর... সেখানে কোনো পুর্বাভাষ ছিল না...
ভালবাসাই স্বর্গ থেকে এসে দু’টি হৃদয়ে নিজের থেকেই বাসা বাঁধল।
৩...
মেয়েরা কেন নিজেই নিজের ‘লাঠি’ হতে পারে না?
আজকাল চলার পথে কতবার যে পড়ে পড়ে উঠে চলতে হয়... চলার পথ যে কতটা বন্ধুর। আর পুরূষগুলো যদি কোনো ভাবে বুঝতে পারে এই মেয়ের বর্তমানে কোনো অবলম্বন নেই, তবেই ছোক ছোক করা শুরু করবে।
সে যে এক ডিভোর্সী যুবতী।
ওর মানুষটা ভালো-মন্দ যা ই ছিল একটা ‘লাঠি’ তো ছিল। সেই দিনগুলোতে এখনকার মত বিড়ম্বনা সহ্য করতে হয়নি। একটা অন্যরকম স্বাধীনতা ভোগ করে আসছিল।
কিন্তু মানুষটা যে কেন শেষ সময়ে ওরকম করল...।
কনার বড় বোন রুনা সেলাই মেশিনে কাজ করার ফাঁকে ফাঁকে এগুলোই ভাবছিল। পাশের রুমে মা থেকে থেকে যন্ত্রণায় কাৎরাচ্ছে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে সে গিয়ে দেখে আসছে। এ রোগ আর সারবার নয়। ওদের সামর্থ অনুযায়ী ওরা চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। মাঝে মাঝে মা’র কষ্টটা দেখে মনে মনে চায় মা মরে যাক! এতো কষ্ট সহ্য করার থেকে একবারে মুক্তি পাওয়াই কি অনেক ভালো নয়? এটা ওর মনে যে ক’বার এসেছে, পরবর্তিতে লুকিয়ে লুকিয়ে অনেক কেঁদেছে সে।
গরীব মানুষের কান্না ছাড়া আর কিই বা আছে?
আচ্ছা, বড় লোকেরা কি কাঁদে?
তাদের নিশ্চয়ই কান্নার মত কোনো দুঃখ-কষ্ট থাকবে না। তবে সুখে কাঁদতে পারে।
নিজের উপরে এবার একটু রাগ হল রুনা।
এসব কি ভাবছে। কাজে মনঃযোগ দিতে পারছে না। অনেকগুলো অর্ডার রয়েছে। আজই ডেলিভারি দিতে হবে। হাত পা দুটোকেই আরো দ্রুত চালানো শুরু করল। তবে সেই সাথে মনটাও ভাবনার জগতে আবার কীভাবে যেন ঢুকে গেলো।
এই বিল্ডিঙের ব্যাচেলর ছেলেগুলো কনার চেয়ে কেন জানি ওকে দেখলেই বেশী কাছে ঘেষতে চায়। কনা একটু রাসভারী এবং সে নিজে স্বামীছাড়া একেলা মেয়ে বলেই কি? ছেলেগুলোকে রুনা কোনো দোষ দেয় না। ওদের তো বয়সই এগুলো করার। কিন্তু ওদের বাড়ীওয়ালা? সেও ওর এই অসহায় অবস্থার সুযোগটা কাজে লাগাতে চায়... এই বয়সেও মেয়ে দেখলে লোকটার মাথা খারাপ হয়ে যায়। এখানে এলেই ওকে মা মা করে... গায়ে মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদের অজুহাতে ওর জঘন্য ইচ্ছেটা মনে মনে মিটাতে চায়... নারী দেহের স্পর্শ নিয়ে কামুকতার রাজ্যে বিচরণ করে।
একজন মেয়ের এজন্যই একজন পুরুষ মানুষ দরকার। সে থাকলে অন্যরা পিছন থেকে অশ্লীল মন্তব্য করতে সাহস পায় না... সাহায্যের নামে নির্জনে ডেটিং এর প্রস্তাব দিতেও পারে না। একজন পুরুষ ছাড়া এই সমাজে আজকাল মেয়েরা সত্যিই ‘একজন মেয়ে’ হয়ে যায়।
বাবার গলার আওয়াজে রুনার ঘোর ভাঙ্গে। বাসার সামনে এতোক্ষণ ওর মেয়ে দুটোকে নিয়ে ছিলেন। এখন ঘরে ঢুকছেন। ওদের দিকে এক পলক তাকিয়ে আবার কাজে মনোযোগ দেয় রুনা।
... ...
বারান্দাটাই আজকাল নিজের রুমের মতো হয়ে গেছে সিদ্দিক সাহেবের কাছে।
এখানে বসলে চারদিকটা সহজেই দেখা যায়। ইদানিং একজন ‘দেখক’ হিসাবেই নিজের ভুমিকা পালন করছেন তিনি। দুই ছেলে আর ওদের মাকে নিয়ে তার যে জগতটা সেটাতে একসময় তার ভুমিকে মূখ্য থাকলেও এখন একজন নীরব দর্শক। যার অখন্ড অবসর... আর বেলাশেষের এই জীবনে তার বয়সী মানুষদের আসলে করার কিছুই থাকে না। এটাই চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। প্রকৃতির অলিখিত বিধান। জীবন নামের রহস্যময় একটা ঘূর্ণিপাকে সাইক্লিক অর্ডারে ঘুরতে থাকাটাই তার প্রধান কাজ।
শরীরে রোগ-ব্যাধিও বাসা বেঁধেছে। ডায়াবেটিস ও হাই ব্লাড প্রেসার এগুলোকে তেমন পাত্তা না দিলেও কিছুদিন আগে একটা ছোটখাট হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেলো। সেটাই পরিবারের সবার দুশ্চিন্তার কারণ। তবে সেই ‘উপলক্ষ্যে’ তার প্রতি সবার যে একটা আলাদা ‘কেয়ার’ সেটাকেও তিনি খুব উপভোগ করছেন। সালেহা তো এখন আগের চেয়ে আরো বেশী হাঁকডাক শুরু করেছে। বিধিনিষেধের বেড়াটা আরো বেশী শক্ত করে তার উপর চাপিয়ে দিয়েছে। খাওয়া দাওয়ার ক্ষেত্রেই এই নিয়ন্ত্রনটা বেশী দেখাচ্ছে সে আজকাল। তবে আজীবন ভালো ভালো খেয়ে দেয়ে অভ্যস্ত সিদ্দিক সাহেবের এই শরীরটা এখন নিয়মতান্ত্রিক জীবনকে মেনে নিতে পারছে না।
বড় ছেলে জাহাঙ্গীর আগে থেকেই বাবার খুব ন্যাওটা। মাকে না জানিয়ে চুপি চুপি বাবাকে সে মাসে মাসে ‘অতিরিক্ত’ কিছু টাকা দেয়। সেটা দিয়েই চলে তার এই ‘একেলা জীবনের রসনা বিলাস’। সকালে ও বিকেলে নিয়ম মাফিক হাঁটার সময়ে বাইরে বেড়িয়ে ‘মনে যা চায়’ সেগুলো তিনি খেয়েই চলেছেন... প্রতিদিনই। জানেন যে এগুলো তার জন্য বিষ। কিন্তু শিশুদের মতো যা ই দেখেন খেতে যে মন চায়!
আর মনের ইচ্ছের বাইরে আগেও কিছু করেননি... এখন কীভাবে সেটাকে নিষেধ করেন?
পেনশনের টাকাটা সংসারে দিয়ে দেন। গ্রামের বাড়ী থেকে চাল-ডাল এগুলো আসে। সেদিক থেকেও কিছুটা সাশ্রয় হয়।
জীবন তো এখন টাকার হিসেবে চলে।
টাকা নেই তো জীবনও নেই!
তবে কি তিনি মৃত?
হয়তো ...
ছোট ছেলে বাবুলকে দেখতে পাচ্ছেন। গ্রামীন ব্যাংকের সামনের চা এর দোকানে আড্ডা দিচ্ছে। ওর সাথের বন্ধুদেরকেও তিনি চিনেন। সবাই সেই ছেলেবেলা থেকেই এক সাথে বড় হয়েছে। বলতে গেলে ওনার চোখের সামনেই বড় হল। আজ ওরা যখন হোন্ডাতে চড়ে পাড়া মাতিয়ে বেড়ায়- দেখতে খুব ভালো লাগে সিদ্দিক সাহেবের। নিজের যৌবনের কথা মনে পড়ে যায়। চাকরি জীবনে নিজেও একজন তুখোড় বাইক চালক ছিলেন। সেদিনের সেই উদ্দামতার কথা মনে পড়ায় একটু হাসলেন। বিগত সোনালী দিনগুলোর নস্টালজিক মুহুর্তগুলো তাকে যেন হাওয়ায় উড়ে এসে সময়ের রথে চড়ে কানে কানে বলে গেলো, ‘ ‘কি বাবু মশায়? ভালো আছেন তো!’
আর বাসায় মন টিকল না। বিকেলের হাঁটার সময়ের এখনো ঢের বাকি। তবুও বের হবার উপক্রম করলেন। ভিতরে সালেহার রুমে একবার উঁকি দিয়ে ধীরে ধীরে দরোজা খুলে বের হলেন।
দরোজা খোলার শব্দে সালেহা বেগম বিছান থেকে উঠে এলেন।
আজ শরীরটা কেমন ম্যাজম্যাজ করছে। এটা যে এখনো সুস্থ আছেন সেটাই আশচর্যের ব্যাপার! সংসারের ঘানি টেনে টেনে আজ তিনি বড় ক্লান্ত...
এখন একটু বিশ্রামের তার বড্ড প্রয়োজন।
কিন্তু চাইলেই কি সব প্রয়োজন মেটানো যায়?
বড় ছেলের বিয়েটা হয়ে গেলে নিজেকে শ্রান্তির কোলে তুলে দিতে পারতেন। কিন্তু ছেলে এখনই বিয়ে করতে চাইছে না। যখনই কথা তুলেছেন ভদ্রভাবে পাশ কাটিয়ে গেছে। বলেছে, ‘আরো একটু দেখি মা।‘
সে যে কি দেখতে চায় সেটাও তিনি বেশ বুঝেন। ছেলে যে সংসারের বর্তমান আর্থিক অসচ্ছলতাকে আরো একটু গুছিয়ে নিয়ে একটা স্থির পর্যায়ে সময়কে টেনে নিতে চাচ্ছে, বেশ উপলব্ধি করেন।
তারপরও... ঘরে একটা মেয়ের বড্ড অভাব বোধ করছেন আজকাল। এই বয়সে নাতীদের সাথে খুনসুটি করে করে আর নিজের ভিতরে ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাওয়া স্নেহের ডালি পেতে ওদেরকে ‘মনে রাখার মত’ কিছু স্মরণীয় স্মৃতি দিতে কার না মন চায়।
সবই বোঝেন তিনি।
কিন্তু ভাগ্যের কাছে জিম্মি হয়ে কেবলই দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া করার কিছুই নেই।
সুখকে পিছু ধেয়ে আয়ত্ত করা যায় না।
তার চেয়ে সুখ নিজে এসে যতটুকু ধরা দেয় সেটুকুতেই অভ্যস্ত হওয়া ভালো।
তিনিও আজীবন সেটাই করে এসেছেন।
এই যে লোকটা সময়ের আগেই বাইরে হাঁটতে চলে গেলো... তিনি সবই দেখেছেন। তার রুমে উঁকি দেয়া... মাসে মাসে জাহাঙ্গীরের তাকে লুকিয়ে টাকা দেয়া... বাইরের হাবিজাবি খাওয়া- এসবই তিনি জানেন। তারপরও সেসব তিনি উপেক্ষা করে আসছেন। মানুষটা তার টাকা কত যায়গায় যে লুকিয়ে রাখে... সেগুলো আবার হারিয়েও ফেলে। তিনিই তার পকেটে আবার গুছিয়ে রেখে দেন... তবে সিদ্দিক সাহেব এসবের কিছুই টের পান না। যেমন টের পান না জাহাঙ্গীরের টাকার অতিরিক্ত আরো কিছু টাকাও তিনি সেই টাকার সাথে মিলিয়ে রেখে দেন।
ভালোবাসা তো দেখানোর কিছু নয়।
সেটা মনে মনে উপলব্ধির একটা ব্যাপার... একজন অপরকে না দেখিয়ে- কিছু পাওয়ার আশা না করেই ভালোবাসতে হয়। সেটাই আসল ভালোবাসা।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিদ্দিক সাহেবকে হেঁটে যেতে দেখেন সালেহা বেগম।
যে ভালোবাসা আজ থেকে ৩২ বছর আগে শুরু হয়েছিল তাদেরকে ঘিরে, সেটা আজও অমলিন রয়ে গেছে দেখে ভিতরে ভিতরে আনন্দ পান... গর্বও হয় একটু... ভালো লাগে! গালে গরম কিছু অনুভুতির সাথে সাথে দূরের সিদ্দিক সাহেব কেমন যেন অস্পষ্ট হয়ে যেতে থাকেন। পলক ফেলতেই ভালোবাসা নোনা জলের সাথে নিম্নগামী হয়ে সিদ্দিক সাহেবকে আবারও স্পষ্ট করে দিয়ে যায়!!
৪...
দায়িত্ববোধ কনার ভালবাসাকে পূর্ণতা দিতে দিচ্ছে না।
এটা ওকে যেমন কষ্ট দিচ্ছে... বাবুলকেও একই ভাবে মর্মবেদনায় তিলে তিলে তড়পাচ্ছে। ধীরে ধীরে ওরা দুজনে অনেক কাছে চলে এলো। কিন্তু যখনই বাবুল বিয়ের প্রসঙ্গ তুলেছে, কনা কেমন নিশ্চুপ হয়ে যায়। ওর চোখে তখন অসহায় বাবা মা এবং বোন-বোন ঝি’র চেহারাটা ভাসতে থাকে।
এ কেমন বিষম জ্বালায় পড়ল সে!
একদিন দুজনে লেকের ধারে বসে আছে।
দুজনেই চুপচাপ।
মাথার উপর দিয়ে একটা নাম না জানা পাখি তারস্বরে চীৎকার করে গেলেও ওদের কোনো ভাবান্তর হল না। শেষে অনেকক্ষণ পরে বাবুল জিজ্ঞেস করে,
‘ এভাবেই কি কাটবে আমাদের জীবন?’
-‘কি ভাবে?’
‘এই যে এখন যেভাবে আছি... পেয়েও না পাওয়ার যন্ত্রনায় থেকে থেকে নীল হচ্ছি!’
-‘তুমি আমাকে কীভাবে পেতে চাও’
‘ একেবারে নিজের করে!’
-‘ তো কে মানা করেছে তোমাকে?’
কোনো কথা না বলে বাবুল মাথা নীচু করে থাকে। ওদের সাথে প্রকৃতিও যেন নিশ্চুপ হয়ে যায়। কনাই নীরবতা ভাঙ্গে,
-‘ আমাকে কি তোমার ফ্যামিলি মেনে নেবে? ... আমার পরিবারের সদস্যদেরা সম্পুর্ণ আমার আয়ের উপরে নির্ভরশীল। বিয়ের পরেও তাদেরকে আমার ই দেখতে হবে...’
‘ তুমি দেখবে... কে মানা করছে?’
-‘ এটা এখন তুমি বলছ। কিন্তু বিয়ের পরে এই কথাটা হয়ত তুমি নাও বলতে পার, তখন?’
‘ না আমি সব সময়ই একই থাকব। তুমি দেখে নিও’
-‘ সে না হয় তুমি থাকলে। কিন্তু আরো সমস্যা রয়েছে। তোমার বড় ভাই বিয়ে করেন নাই। তুমি নিজেও কিছু করছ না। এভাবে বেকার জীবন আর কতদিন কাটাবে?’
‘ আমার জীবনে তুমি না আসা পর্যন্ত জীবন ছিল এক রকম। এখন অন্যরকম। আমি চেষ্টা করছি কিছু একটা করার।‘
-‘আগে সেটা কর। ... আর তোমার বাসায় আমার কথা এই মুহুর্তে কিছু বলার দরকার নেই। তুমি নিজের পায়ে দাঁড়াও। আমিও আরো একটু গুছিয়ে নেই।‘
‘আচ্ছা।‘
দুজন অতি সাধারণ মানুষ যারা একে অন্যকে নিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখছে, একটা স্থির লেকের পার থেকে উঠে গতিময় জীবনের পানে আগায়। সামনের পথ অনেক বন্ধুর... কিন্তু তাঁরা একে অন্যের হাত ধরে আগাতে থাকে।
বড্ড শক্ত করে ধরা সেই হাত!
সহজে ছুটবে বলে মনে হয় না।
ওদেরকে অপ্রকাশ্য এক অনুভুতি অদৃশ্য এক বাঁধনে জড়িয়ে রেখেছে।
এই অনুভুতি ‘ভালবাসা’ নামে পরিচিত।
কিন্তু সব হাতে সে ধরা দেয় না।।
(শেষ)
বিষয়: সাহিত্য
১৩৫৯ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
"অপ্রকাশ্য এক অনুভূতি অদৃশ্য নাধনে জড়িয়ে রাখে দু'জনকে।
এই অনুভূতি'ভালবাসা' নামে পরিচিত।
কিন্তু সব হাতে সে ধরা দেয় না।।
শুধু ভালবাসা দিয়েই জীবন চলে না।।"
আর সাঈদী সাহেবের আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।
ধন্যবাদ।
আল্লামা সাঈদী সাহেবের জন্যে মনটা ভীষণ খারাপ,কিছু না করতে পারার ব্যর্থতা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে ভেতরে।
পরওয়ার দিগারের কাছে সঠিক ফায়সালার আর্জি জানাই.........
ধন্যবাদ।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
একবারেই জীবন্ত গল্পের মত লেখা। মনে হয় আমার জীবনেরই ঘটনা। খুব সুন্দর লিখেছেন Fantastic Fantastic
আর অনুভূতি রেখে যাবার জন্য আপনাকেও অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
: তোমার প্রতিদিন এই ঘ্যান ঘ্যান আর ভালো লাগে না মা। আমি যদি ইন্সিউরেন্সের দালাল হই, তুমি নিজেই তো একটা পলিসি করবে না... কি করবে?
মা ছেলের তর্কটা খুবই সুন্দর লাগল। আপনার লিখার স্টাইলটাই অন্য ধরনের, যদি আমিও সেভাবে লিখতে পারতাম। অনেক ধন্যবাদ
আমিও আপনার লেখা খুব পছন্দ করি। আপনার প্রতিটি লেখা (যে ক'টি এখন পর্যন্ত পড়েছি) লাইন বাই লাইন পড়ি এবং বোঝার চেষ্টা করি। অনেক ভালো লিখেন আপনি।
শুভেচ্ছা রইলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন